অক্সফোর্ড টিকা পরীক্ষার যে সর্বশেষ তথ্য দ্য ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গেছে, এটি বৃদ্ধদের মাঝে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে।
ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে মিলে অক্সফোর্ডের তৈরি করা ‘চ্যাডঅক্স১ এনকোভ-২০১৯’ টিকাটি উৎপাদনের জন্য ইতোমধ্যে বিশ্বের নানা প্রান্তের অনেক প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এটিই মূলত বাংলাদেশে বৃহৎ বা মাঝারি পর্যায়ের টিকাদান কর্মসূচিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে।
দ্য ল্যানসেট সাময়িকীতে বুধবার প্রকাশিত দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার তথ্যে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ ও মারা যাওয়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা গোষ্ঠীর মানুষের মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে অক্সফোর্ড টিকা। একে ৫৬ থেকে ৬৯ এবং ৭০ বছরের অধিক বয়সী সুস্থ ব্যক্তিদের মাঝে বলিষ্ঠ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে দেখা গেছে।
গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, পরীক্ষায় তিন বয়সের গ্রুপ- ১৮ থেকে ৫৫, ৫৬ থেকে ৬৯ ও ৭০ বছরের অধিক- সবার মাঝে একই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে দেখা গেছে। আর নিবিড় নিরীক্ষায় ৭০ বছরের অধিক ২৪০ জনসহ মোট ৫৬০ সুস্থ ব্যক্তিকে নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে যে টিকাটি তরুণদের চেয়ে বরং বৃদ্ধরা ভালোভাবে সহ্য করতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী কোভিড শনাক্ত ৫.৬৮ কোটি ছাড়াল
এ স্বেচ্ছাসেবকরা টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করেছিলেন। তাদের মাঝে টিকা সংক্রান্ত গুরুতর কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা যায়নি।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের অন্যতম দলনেতা অধ্যাপক অ্যাড্রো পোলার্ড বৃহস্পতিবার বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গরমের সময় সংক্রমণের হার কম থাকায় গবেষণা ছিল ধীর গতির। কিন্তু এখন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে মহামরি পুনরায় আঘাত হানায় টিকার ফলাফল প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য জমা করছে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা।
‘আমার মনে হয় আমরা কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছি এবং এ অগ্রগতির ভিত্তিতে এটি অবশ্যই বড়দিনের আগেই হবে,’ বলেন তিনি।
তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও রাশিয়ার স্পুটনিক- এ তিন টিকা ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। সবগুলোর কার্যক্ষমতা ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ৫০ শতাংশের মতো কার্যক্ষমতার টিকা ব্যবহার করতেও রাজি আছেন।
উল্লেখ, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার তিন কোটি ডোজ ক্রয় করতে চলতি মাসের শুরুতে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সাথে চুক্তিতে যায় বাংলাদেশ। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পেতে সিরামের সাথে সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা।